যশোরের যশ খেজুরের রস এ প্রবাদকে সত্যি করে তুলতে অভয়নগরসহ পুরো যশোরে কয়েক দিন পর শুরু হবে খেজুরের গুড় ও পাটালি তৈরির মহোৎসব। বাড়ি বাড়ি খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে পিঠা-পায়েসসহ নাম না-জানা মুখরোচক খাবার তৈরির ধুম পড়ে যাবে। তাই শীত মৌসুম শুরু হওয়ার আগে থেকেই রস ও গুড়ের চাহিদা মেটাতে গাছিরা খেজুর গাছ খিলি দিতে শুরু করেছেন।
ধারালো দা (গাছিদা) দিয়ে খেজুর গাছের সোনালি অংশ বের করা হয় একে বলে চাঁচ দেওয়া। চাঁচ দেওয়ার সপ্তাহখানেক পর নোলন স্থাপনের পর শুরু হবে রস আহরণ। কদিন আগে ভোরের শিশির ভেজা ঘাস আর ঘন কুয়াশার চাদর জানান দিচ্ছিল শীতের আগমনিবার্তা। হুট করে জেঁকে বসেছে হিমশীত। এ মৌসুমে খেজুরের রস গ্রামীণ জনপদে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। শীতের আমেজ যেন পূর্ণতা পায়। শীত যত বাড়বে, রসের মিষ্টিও তত বাড়বে। এ জনপদে শীতের সবচেয়ে বড় আর্কষণ দিনের শুরুতে খেজুরের রস, সন্ধ্যা রস ও গুড়-পাটালি। পিঠা ও পায়েস তৈরিতে আবহমানকাল থেকে গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে খেজুরের গুড় ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখানকার কারিগরদের দানা পাটালি তৈরির সুনাম রয়েছে। এখানের খেজুরের গুড় ও পাটালির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশ-বিদেশে। অভয়নগর উপজেলার খেজুরের রস ও পাটালি আমাদের গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক। দাম বেশি পাওয়ার আশায় এ অঞ্চলের গাছিরা শীতের আগেই গাছ থেকে রস আহরণের জন্য গাছ প্রস্তুত করে রাখেন। এতে রস ও গুড়ের দাম তুলনামূলক বেশি পাওয়া যায়। একটি গাছ থেকে রস আহরণের জন্য প্রস্তুত করতে গাছিকে খরচ করতে হয় প্রায় ৩০০ টাকা। একজন গাছি নিজের গাছসহ চুক্তিতে অন্যের কাছ থেকেও গাছ ইজারা নিয়ে থাকে। সে রস, গুড় ও পাটালি বিক্রি করে খরচ বাদে প্রায় ৫০-৮০ হাজার টাকা লাভ করে।